চন্দ্র ক্যালেন্ডারের বৈজ্ঞানিক সুবিধা (১ম পর্ব)
ডঃ করিমা বার্নস
Published: 2023-07-20 13:02:13 BdST | Updated: 2024-04-29 10:36:49 BdST
ইসলামিক ক্যালেন্ডার, সম্পূর্ণরূপে চন্দ্রচক্রের উপর ভিত্তি করে চলে। সর্বপ্রথম ৬৩৮ খ্রিস্টাব্দে রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর ঘনিষ্ঠ সাহাবী এবং দ্বিতীয় খলিফা হযরত উমর ইবনে আল-খাত্তাব (রা.) এর সময়ে প্রবর্তন করা হয়। তিনি তার সময়ের বিভিন্ন তারিখ পদ্ধতির সমন্বয় করতে চেয়েছিলেন।
হিজরী ক্যালেন্ডার মুসলমানদের জন্য সময় গণনার শুধুমাত্র একটি আবেগী বিষয় নয়; বরং এর রয়েছে গভীর ধর্মীয় ও ঐতিহাসিক তাৎপর্য। তদুপরি, মনোবিজ্ঞান, শরীরবিদ্যা এবং পরিবেশের ক্ষেত্রে আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ইহা অনেকভাবে বৈজ্ঞানিক প্রভাব ফেলেছে। চন্দ্র ক্যালেন্ডারের ব্যবহার বা অন্তত ইহাকে স্বীকৃতি দেওয়ার মাধ্যমে আমরা মুসলিম হিসেবে অনেক সুবিধা লাভ করি। মুসলিমরা তাদের সমস্ত ধর্মীয় কাজ হিজরি ক্যালেন্ডারে লিপিবদ্ধ করে নিয়ে সম্পাদন করে।
রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, তোমরা চাঁদ দেখে রোজা রাখ এবং চাঁদ দেখে রোজা ভঙ্গ কর” (বুখারি, মুসলিম শরীফ)।
গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার ব্যবহার করার সময় আমাদের এই ধরনের বিষয়ের ভাব আদর্শ বা চেতনা থেকে আমরা বিস্মৃত থাকি।
মহাগ্রন্থ আল-কোরআনে বলা হয়েছে, আর তিনি তোমাদেরকে রাত্রি ও দিনের অধীন করে দিয়েছেন এবং সূর্য, চন্দ্র ও নক্ষত্রসমূহ তাঁর আদেশের অধীন। (সূরা আন-নাহল ১৬:১২)।
অনেক বিজ্ঞানী বিশ্বাস করেন যে এখানে "অধীন" বলতে কেবল একটি ক্যালেন্ডারের ভিত্তি হওয়া নয়, বরং তার চেয়ে অনেক বেশি কিছু বোঝায়। গবেষণায় দেখা গেছে যে, প্রকৃত পক্ষে চাঁদ আমাদের মেজাজ এবং শারীরিক চক্রকে প্রভাবিত করে। যদিও বেশিরভাগ লোকেরা নতুন বা পূর্ণিমা কখন হবে তা বলতে পারে না। এই চন্দ্রচক্র জন্ম উর্বরতা এবং মেজাজ চক্র সম্পর্কে অনেক অন্তর্দৃষ্টি প্রদান করতে পারে। কিছু বিজ্ঞানী পরামর্শ দেন যে চন্দ্রচক্রের প্রভাবসমূহ অসংখ্য জীবন গঠনে স্পষ্ট ভাবে প্রতিয়মান হয়। উদাহরণস্বরূপ, চন্দ্রের জোয়ারের চক্র অনুসারে শেলফিশ তাদের খোলস পুনর্নবীকরণ করে এবং পুনর্জন্ম ও যৌনকার্যকলাপের মধ্য দিয়ে যায়। গাপ্পি মাছের পিঠে রঙের সংবেদনশীলতা থাকে যা পূর্ণিমার সময় সবচেয়ে বেশি ক্রিয়াশীল হয়। গোল্ডেন হ্যামস্টার কাজে চন্দ্রের ছন্দ দেখা যায় এবং এটা তদনুযায়ী ইউরিন এবং এসিডের মাত্রা প্রদর্শন করে। শিকারি এবং জেলেরা চাঁদ চক্র খুব ভালভাবে জানে। সমুদ্রের প্রাণীরা চন্দ্রের চক্রের সাথে যুক্ত উচ্চ সংবেদনশীলতা দেখায়; উদাহরণস্বরূপ তাদের প্রজনন চক্র চন্দ্র চক্রের উপর ভিত্তি করে চালিত হয়। সঠিক চন্দ্রের ছন্দ মাছের প্রজনন চক্রকে প্রভাবিত করে। ঝিনুক উচ্চ জোয়ারে তাদের খোলস খোলে। চিংড়িরা পূর্ণিমায় ঝাঁকে ঝাঁকে আসে, সেই সময়ে তারা পূর্ব অনুমান অনুযায়ী সঠিক সময়ে খাবারের জন্য উঠে আসে। (চলবে)
সকল প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: