কেয়ামতের দশ নিদর্শন
এবাউট ইসলাম অবলম্বনে, মুহাম্মদ আল-বাহলুল
Published: 2019-04-10 23:46:12 BdST | Updated: 2024-05-15 20:08:21 BdST
Photo Credit: about Islam
রাসূল (সা.) এর এক হাদীসে কেয়ামতের নিকটবর্তী হওয়ার লক্ষন হিসেবে দশটি নিদর্শনের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এই নিদর্শনসমূহ সম্পর্কে বলা হয়েছে, হার ছিড়ে গেলে যেমন হারের পুঁতিগুলো একের পর এক খুলে আসে, ঠিক তেমনি কিয়ামত নিকটবর্তী হলে এই নিদর্শনগুলোর একটির পর একটির আগমন ঘটবে।
হযরত হুযাইফা ইবনে উসাইদ (রা.) থেকে বর্ণিত,
‘একবার আমরা কেয়ামতের নিদর্শন সম্পর্কে আলোচনা করছিলাম এবং এসময় আমাদের মাঝে রাসূল (সা.) আগমন করেন। তিনি আমাদের বলেন, “দশটি নিদর্শনের প্রকাশ না হওয়া পর্যন্ত কেয়ামত হবেনা: ধোয়া, দাজ্জাল, ভূমি থেকে উদ্ভুত চতুষ্পদ জন্তু, পশ্চিম থেকে সূর্যোদয়, ঈসা ইবনে মরিয়মের আগমন, ইয়াজুজ-মাজুজের আগমন এবং তিনটি মারাত্মক ভূমিধ্বস; একটি পশ্চিমে, একটি পূর্বে এবং তৃতীয়টি আরব উপদ্বীপে এবং দশম নিদর্শন হিসেবে ইয়েমেন থেকে একটি অগ্নিকুন্ডের উদ্ভব হবে এবং এটি লোকদের তাড়িয়ে হাশরের মাঠে একত্রিত করবে।” (মুসলিম)
শেষ এই সময়টি প্রকৃতপক্ষেই মানুষের জন্য একটি কঠিন বিপদের সময়। এটি এমন বিপদ যার সম্মুখীন রাসূল (সা.) এর সাহাবীরাও তাদের উপর মক্কার নির্যাতনের দিনগুলোতে হননি।
একবার চিন্তা করুন, আপনি সেই শেষ সময়ে অবস্থান করছেন এবং আপনার চোখের সামনে একটির পর একটি বিধ্বংসী ঘটনা ঘটে যাচ্ছে, আর আপনি বুঝে উঠতে পারছেন না আপনার কি করা উচিত।
রাসূল (সা.) অনত্র এই নিদর্শনসমূহ সম্পর্কে বলেছেন,
“তসবিহর একটি মালা যদি তুমি ছিড়ে ফেল, তখন কি ঘটে? সকল দানা যার একটির সাথে অপরটির সংযোগ ছিল, তা একে একে খুলে আসতে থাকে।”
ইবনে হাজার এই প্রসঙ্গে লেখেন,
“এই নিদর্শনসমূহের আলোচনার সমন্বয়ে ধারনা হয়, প্রথম গুরুত্বপূর্ণ নিদর্শন হিসেবে দাজ্জালের আগমন ঘটবে। এর মাধ্যমে নিম্নজগত তথা পৃথিবীর সম্পূর্ণ অবস্থার পরিবর্তন ঘটবে এবং ঈসা (আ.) এর ইন্তেকালের মধ্য দিয়ে এই অবস্থার সমাপ্ত হবে। এবং সূর্যের পশ্চিম থেকে উদয়ের মাধ্যমে উর্ধ্বজগতের পরিবর্তনের সূচনা হবে এবং আসল কেয়ামতের মাধ্যমে এর সমাপ্ত হবে।
এবং সম্ভবত ভূমি থেকে উদ্ভুত চতুষ্পদি জন্তুর আগমন সূর্য পশ্চিমে উদিত হওয়ার দিনেই ঘটবে। পশ্চিমে সূর্য উদয়ের মাধ্যমে তওবার দরজা বন্ধ হওয়ার চিহ্ন প্রকাশ করবে। এরপর, ভূগর্ভের চতুষ্পদি জন্তু এসে মুমিন ও কাফেরদের পৃথক করবে। এবং এটিই তওবার দরজা বন্ধ হওয়ার উপযুক্ত নিদর্শন।
এবং কেয়ামতের সূচনার প্রথম নিদর্শনই হবে সেই আগুন যা সকল লোককে একত্রিত করবে।”
এই সকল নিদর্শনই খুবই সংক্ষিপ্ত সময়ের মধ্যে সংগঠিত হবে। যেই মুহূর্তে দাজ্জালের আগমন ঘটবে, ঠিক সেই মুহূর্ত থেকে একের পর এক নিদর্শন সামনে চলে আসবে। তবে তার নির্দিষ্ট মুহূর্ত সম্পর্কে জ্ঞান একমাত্র আল্লাহর নিকটেই সংরক্ষিত।
আল্লাহ আমাদের সকলকে নির্দিষ্ট এই সময়ের পূর্বেই তার ক্ষমা ও সন্তুষ্টি অর্জনের তৌফিক দান করুন।
সকল প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: