উসমান (রা.)-এর কুরআন মাজীদ যেভাবে তাসখন্দে এলো!
ইসলামী বার্তা ডেস্ক
Published: 2022-02-28 13:21:44 BdST | Updated: 2024-05-14 08:10:30 BdST
উজবেকিস্তানের তাসখন্দে সংরক্ষিত কুরআনের প্রাচীন একটি পান্ডুলিপিকে বিশ্বাস করা হয় ইসলামের তৃতীয় খলীফা হযরত উসমান ইবনে আফফান (রা.) এর ব্যবহৃত পান্ডুলিপি। কুরআনটির কিছু পৃষ্ঠায় রক্তের দাগ রয়েছে, যার ফলে মনে করা হয়, শাহাদাতের সময় কুরআনের এক পান্ডুলিপি থেকেই হযরত উসমান (রা.) তেলওয়াত করছিলেন।
কুরআনের প্রথম পান্ডুলিপিটি হযরত আবু বকর (রা.) এর সময় সংকলিত হয়। পরবর্তীতে হযরত উমর (রা.) এবং তার পর হযরত উসমান (রা.) এর হাতে খেলাফতের দায়িত্বের সাথে সাথে সংকলিত এই পান্ডুলিপিটি সংরক্ষণের দায়িত্ব আসে।
হযরত উসমান (রা.) খেলাফতের দায়িত্ব গ্রহণের পর মূল এই পান্ডুলিপি থেকে আরও সাতটি পান্ডুলিপি তৈরি করেন। এগুলোকে তিনি খেলাফতের বিভিন্ন স্থানে প্রেরণ করেন এবং একটি পান্ডুলিপি তার নিজের কাছে সংরক্ষিত রাখেন। তার শাহাদাতের সময় পর্যন্ত এটি তার কাছে সংরক্ষিত ছিল।
হযরত উসমান (রা.)-এর শাহাদাতের পর কুরআনের এই পান্ডুলিপিটি বর্তমান ইরাকে নিয়ে যাওয়া হয় এবং দীর্ঘদিন সেখানেই এটি সংরক্ষিত ছিল।
মধ্য এশিয়ার দিগ্বিজয়ী তৈমুর লং পারস্য ও ইরাক বিজয় করার পর কুরআনের এই পান্ডুলিপিটি তার রাজধানী সমরকন্দে নিয়ে যান। ১৮৬০ এর দিকে রাশিয়ার সমরকন্দ দখলের পূর্ব পর্যন্ত কুরআনের এই পান্ডুলিপিটি এখানেই সংরক্ষিত ছিল।
রুশ সাম্রাজ্যবাদী শক্তির সমরকন্দ দখলের পর কুরআনের এই পান্ডুলিপিটি রাজধানী সেন্ট পিটার্সবার্গে নিয়ে আসা হয় এবং সেখানের রাজকীয় গ্রন্থাগারে তা সংরক্ষণ করে রাখা হয়।
১৯১৭ সালে রুশ বিপ্লবের পর পরিবর্তিত সমাজতান্ত্রিক রাশিয়ার তৎকালীন নেতা লেনিন রাশিয়া ও মধ্য এশিয়ার মুসলমানদের মন জয় করার জন্য কুরআনের এই পান্ডুলিপিটি ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেন।
বর্তমান রাশিয়ার অধীন বাশকুরতুস্তানের উফা শহরে কুরআনের এই পান্ডুলিপিটি পাঠানো হয়। পরবর্তীতে উজবেকিস্তানের রাজধানী তাসখন্দের মুসলমানদের আবেদনের প্রেক্ষিতে এটিকে তাসখন্দে সংরক্ষণের জন্য পাঠানো হয়। ১৯২৪ সাল থেকে কুরআনের এই পান্ডুলিপিটি তাসখন্দের খাস্ত-ইমাম কমপ্লেক্সে সংরক্ষিত আছে।
সকল প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: