ইসমাইল রাজী আল ফারুকী: মুসলিম চিন্তা জগতের এক উজ্জ্বল ধ্রুবতারা (শেষ পর্ব)


ফাহমিদ-উর-রহমান
Published: 2023-01-14 10:03:05 BdST | Updated: 2024-05-14 03:01:17 BdST

জ্ঞানের ইসলামী করণের ধারণা ফারুকীর জীবনের একটা গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। তার বাস্তব পরিকল্পনাসমূহের মধ্যে ছিল নতুন প্রজন্মের মুসলমানদেরকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আধুনিক পদ্ধতিতে কিন্তু ইসলামী আদর্শের ছায়ায় সুশিক্ষিত করে তোলা। তিনি মনে করতেন মুসলিম দুনিয়ার রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, এবং ধর্মীয়-সাংস্কৃতিক বন্ধ্যাত্বের কারণ হচ্ছে এখানকার দ্বিমুখী শিক্ষা ব্যবস্থার পরিণতিস্বরূপ জীবনদৃষ্টির অভাব। ফারুকী সমস্যার গভীরতা বিশ্লেষণ করে বলেছেন দ্বিমুখী শিক্ষা ব্যবস্থার কারণে সমাজে দুটি প্রতিদ্বন্দ্বী শ্রেণীর সৃষ্টি হয়, ফলে মুসলিম উম্মাহর সাম্যাবস্থা বিঘ্নিত হয়। এর একদিকে আছে সেকুলার এলিটসমূহ অন্যদিকে ঐতিহ্যবাহী ধর্মীয় নেতৃত্ব। আল ফারুকী এই দুর্যোগের প্রতিকার হিসেবে দুটি উপায় দেখিয়েছেনঃ প্রথমত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ইসলামী সংস্কৃতি ও নীতিসমূহকে বাধ্যতামূলক করা দ্বিতীয়ত আধুনিক জ্ঞানের ইসলামীকরণ করা।

ফারুকীর এই প্রস্তাবনার মধ্যে তার প্রিয় বিষয় ইসলামী আধুনিকতাবাদী ও পুনরুজ্জীবনবাদী উভয়বিধ ভাবনার সমন্বয় আমরা দেখতে পাই। তিনি মুসলিম উম্মাহর দুর্বলতা ও ব্যর্থতার কারণ চিহ্নিত করে বলেছেন ইসলামের সৃষ্টিশীলতার উৎস ইজতিহাদ পরিত্যাগ, ওহী (Revelation) ও আকলের (Reason) মধ্যে বিরোধিতা, চিন্তা ও কর্মের মধ্যে বিচ্ছিন্নতা এবং সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় দ্বৈততা। এ কারণেই ফারুকী চিন্তা ও কর্ম, আদর্শ ও বাস্তবায়নের মধ্যে ঐক্যের কথা ভেবেছেন। এ লক্ষ্যে তিনি মুসলিম দুনিয়ার বিভিন্ন দেশ সফর করেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়সমূহে বক্তৃতা দিয়েছেন এবং সর্বোপরি নিজের টেম্পল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে মুসলিম ছাত্রদেরকে নিয়ে তিনি তার ‘জ্ঞানের ইসলামীকরণের' নিরীক্ষা চালিয়েছেন। ইসলামী ইতিহাসের একজন নিবিড় পাঠক হিসেবে ফারুকী এটা বুঝেছিলেন আধুনিকতা ও ঔপনিবেশিকতা নামের পশ্চিমী দানব মুসলিম সমাজকে ভেঙ্গেচুরে পুরদস্তর ওলটপালট করে দিয়েছে। ঔপনিবেশিক শাসকরা মুসলিম রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে গুঁড়িয়ে দিয়েছে, অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে মুসলিম দুনিয়াকে পাশ্চাত্যের উপর পুরোপুরি নির্ভরশীল বানিয়ে ছেড়েছে এবং সর্বোপরি শিক্ষা ও সংস্কৃতির পাশ্চাত্যকরণ করে মুসলমানের ঐতিহাসিক চেতনাবোধকে দুর্বল করে দিয়ে একটি হীনম্মন্য জাতিতে পরিণত করেছে। এটা বোঝা দরকার পাশ্চাত্যের সেকুলার শিক্ষা ব্যবস্থা তাদের নিজস্ব জীবন ও জগত সম্পর্কিত ধ্যান ধারণার প্রতিফলন মাত্র এবং এই শিক্ষা আমাদের জীবন ও দর্শনের সাথে আদৌ সংগতিপূর্ণ নয়। প্রত্যেক শিক্ষার পিছনেই একটা দর্শন থাকে এবং সেই দর্শনই জাতির লক্ষ্যকে সমুন্নত করে। ঔপনিবেশিক শাসকরা যখন সেকুলার শিক্ষা আমাদের উপর চাপিয়ে দেয় তখন তারা ভালো করেই জানতো এর মাধ্যমে মুসলমানদেরকে বিজাতীয় গবেষণা ও নেতৃত্বের উপর নির্ভরশীল করে রাখা যাবে এবং এই কাজে তারা শতভাগ সফল হয়েছে। তাই ঔপনিবেশিক শাসকরা বিদায় নিলেও তাদের শিক্ষা ব্যবস্থা আজও মুসলিম মনকে উপনিবেশিত করে রেখেছে। বিগত কয়েকশ বছর ধরে সেকুলার জাতীয়তাবাদ পাশ্চাত্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে অনুপ্রেরণা দিয়ে আসছে। পশ্চিমীরা যে অর্থে জাতীয়তাবাদী কিংবা সেকুলার জীবন দর্শনে বিশ্বাসী সে অর্থে মুসলমানদের 'বিশ্বাসী' হওয়া সম্ভব নয়। আত্মদর্শন ছাড়া কোন কিছু সৃষ্টি করা যায় না। ইসলামই হচ্ছে মুসলিম সমাজের জীবন দর্শন । ইসলাম বর্জিত সেকুলার শিক্ষা ব্যবস্থার অধীন মুসলমানরা তাই গত দুশ বছরে তেমন কিছুই সৃষ্টি করতে পারেনি। তারা পশ্চিমা দৃষ্টিভঙ্গির শুধু শুধু অনুলিপি করেছে মাত্র। এই জন্যই মুসলিম চিন্তার জগতে আজকাল যারা নেতৃত্ব দিচ্ছেন বলেদাবি করছেন তারা আসলে মূলতঃ সুশিক্ষাবিহীন, তাদের না আছে সংস্কৃতিক চেতনা, না আছে লক্ষ্য সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা। কারণ তারা মুসলিম সমাজে জন্মগ্রহণ করে। মুসলিম চৈতন্যকে ধারন করেননি। পশ্চিমী চিন্তাকে মুসলিম সমাজে প্রতিস্থাপিত করে আধুনিকতার নকলনবিস সৃষ্টি করেছেন মাত্র। যার ফলে মুসলিম সমাজের এক্য, সংহতি ও মূল্যবোধ ভেঙ্গে পড়েছে এবং এই পরিপ্রেক্ষিতে মুসলিম দেশগুলোর উপর পাশ্চাত্যের খবরদারীও বাড়ছে। ইকবাল, মোহাম্মদ আসাদ, সাইয়েদ কুতুবের মত পন্ডিতেরা পশ্চিমের এই জ্ঞানতাত্ত্বিক কাঠামোর নিয়ন্ত্রণ থেকে মুসলিম সমাজকে বের করে আনতে চেয়েছিলেন। ইসমাইল ফারুকী মুসলিম জগতের এই জ্ঞানতাত্ত্বিক de-colonization-অ-উপনিবেশীকরণের সিলসিলাকে আরো এগিয়ে নিয়েছেন এবং বিশেষ করে শিক্ষা  ব্যবস্থাকে অ-উপনিবেশিকরণের লক্ষ্যে বাস্তব কর্মসূচী প্রণয়ন করেছেন। তিনি জ্ঞানের বিষয় বা শাখা হিসেবে মানবিক, সমাজবিজ্ঞান ও প্রাকৃতিক বিজ্ঞানকে ইসলামী দর্শনের আলোকে পুনর্গঠিত করবার উপর জোর দিয়েছেন বিশেষ করে তৌহিদের মূলনীতিকে শিক্ষা ব্যবস্থার সাথে সামঞ্জস্যশীল করবার কথা বলেছেন।

জীবনের শেষ দিনগুলোতে তিনি ইসলামী সংস্কারের লক্ষ্যে কৌশলগত পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নের উপায়গুলো বারবার ওলটপাল্ট করে দেখেছেন এবং তার ব্যাখ্যাত ইসলামের অর্থের সাথে মুসলিম জীবনে তার তাৎপর্যপূর্ণ স্থানকে চিহ্নিত করার চেষ্টা করেছেন। একই সাথে মুসলমানদের শিক্ষিত ও ঐক্যবদ্ধ করার প্রয়াসও চালিয়েছেন। তিনি অনুভব করেছেন মুসলিম সমাজে তার অপাশ্চাত্যমুখী (Non-Western Model) উন্নয়নের মডেল বাস্তবায়নের জন্য নতুন প্রজন্মের মুসলমানদের যথাযথভাবে শিক্ষিত করে তোলা দরকার। তিনি তার মিশনকে এগিয়ে নেয়ার জন্য তাই বেশ কয়েকটি প্রকল্প হাতে নেন। ফারুকী শিকাগোতে American Islamic College প্রতিষ্ঠা করেন এবং দীর্ঘদিন এর সভাপতি হিসেবে কাজ চালান। ১৯৮১ সালে ভার্জিনিয়াতে তিনি International Institute of Islamic Thought প্রতিষ্ঠায় নেতৃত্ব দেন। তার স্বপ্ন ছিল আমেরিকায় একটি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা, কিন্তু তার এ মহৎ পরিকল্পনা জীবদ্দশায় বাস্তবে রূপ পায়নি। ফারুকীর কথা হলো মুসলিম সমাজ বিশেষ করে এর বুদ্ধিজীবীরা যেভাবে পশ্চিমীকৃত হয়ে উঠছে তার মোকাবিলায় জ্ঞানের ইসলামীকরণের বিকল্প নেই। এক্ষেত্রে তার প্রতিষ্ঠিত International Institute of
Islamic Thought জ্ঞানের বিভিন্ন বিষয়কে ইসলামীকৃত করে এক স্বতন্ত্র দৃষ্টিভঙ্গি ও স্রোত সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখবে। এইভাবে মুসলিম সমাজ পশ্চিমীকৃত না হয়েও আধুনিক ও যুগোপযোগী চিন্তার উন্মেষ ঘটাতে পারবে এবং তারা ইসলামী নীতি ও মূল্যবোধকে আঁকড়ে থেকেও বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সুফলগুলো ভোগ করতে সক্ষম হবে।

ছয়
ফারুকীর আর একটা আগ্রহের কথা না বললে এ আলোচনা অসম্পূর্ণ রয়ে যাবে। এটি হলো আন্তঃধর্মীয় আলোচনায় (Interfaith Dialogue) তার অপরিসীম আগ্রহ। ইসলাম সম্পর্কে তার বিশিষ্ট চিন্তাভাবনা পশ্চিমের সামনে তুলে ধরবার পরেও তিনি মনে করতেন বিশ্বের স্থিতিশীলতা ও শান্তির স্বার্থে ইব্রাহীমের সন্তানদের (ইহুদী, খ্রিস্টান ও মুসলমান) ধর্মীয়, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক একটি সাধারণ প্লাটফরমে বোঝা পড়া প্রয়োজন। ফারুকীর এ আগ্রহের ফসল হচ্ছে তার বিখ্যাত বই Trialogue of the Abrahamic Faiths Historical Atlas of the Religions of the World! এছাড়া ১৯৬৭ সালে তার প্রকাশিত বই Christian Ethics খ্রিস্টান ধর্মের উপর এ কালের এক বিদগ্ধ মুসলমানের চিন্তাভাবনার বহিঃপ্রকাশ। একজন ইসলামী বুদ্ধিজীবী ও দাওয়া কর্মী হিসেবে তিনি আমৃত্যু ইসলামের সাথে অন্যান্য ধর্ম বিশেষ করে খ্রিস্টান ও ইহুদী ধর্মের আলোচনার উপর গুরুত্ব দিয়েছেন এবং পারস্পরিক সহিষ্ণুতা ও একটি সাধারণ নৈতিক মূল্যবোধকে পারস্পরিক যোগাযোগ ও সহযোগিতার ভিত্তি করবার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে গেছেন।

এই সাধারণ নৈতিক ভিত্তিকে তিনি বলেছেন হানিফ যা তার ভাষায় incorporates every noble thought in the old Testament। 'হানিফ' কথাটা ফারুকীর লেখাজোখায় বিশেষ করে ধর্মগুলোর পারস্পরিক আলোচনায় বারবার ফিরে এসেছে। ‘হানিফ' বলতে তিনি ইব্রাহীমের ঐতিহ্যকেও বুঝিয়েছেন যা সবরকম শিরক ও পৌত্তলিক রীতির বিরোধী এবং নৈতিকভাবে স্বতন্ত্র এক গোষ্ঠী। ১৯৭০'র দশক থেকেই অন্যধর্মের সাথে আলোচনায় তিনি একজন প্রধান ব্যক্তিত্বে পরিণত হন এবং তার লেখা, ৰক্তৃতা, আন্তঃধর্মীয় সংলাপগুলোতে তার অংশগ্রহণ ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়। বিশেষ করে তার লেখা ও উপস্থাপনা এ ধরনের আন্তঃধর্মীয় সংলাপে মুসলিম অংশগ্রহণের নীতি তৈরিতে সহায়ক হয়।

ফারুকী তার বিখ্যাত বই Christian Ethics লিখেছিলেন ম্যাকগিল বিশ্ববিদ্যালয়ে কাজ করবার সময়। এ সময় খ্রিস্টীয় চিন্তা ও ধর্মতত্ত্ব নিয়ে তিনি বিপুল অধ্যয়ন করেছিলেন এবং এ সূত্রেই তিনি তার বিখ্যাত সহকর্মী উইলফ্রেন্ড কান্টওয়েল স্মিথ, চার্লস এ্যাডামস, স্ট্যানলি ব্রাইস ফ্রস্ট প্রমুখের সাথে এ বিষয়ে আলোচনা ও বিতর্কে প্রবৃত্ত হওয়ার সুযোগ পান।

Christian Ethics-এ ফারুকীর বুদ্ধিজীবিতা, চিন্তার বৈদগ্ধ ও ভাষাতাত্ত্বিক জ্ঞানের বিস্তৃতি যেন ঝলমলিয়ে উঠেছে। এ বইতেই তিনি আন্তঃধর্মীয় আলোচনার একটি নীতি উপস্থাপনা করেছেন, যেটাকে তিনি বলেছেন metareligious approach এবং এই নীতি কোন একটি বিশেষ ধর্মীয় ঐতিহ্যকে অনুসরণ করবে না। ফারুকী এই ধরনের আলোচনায় হীনম্মন্যতামূলক (apologetic) ও বিতর্কিত (polemic) বিষয়কে পরিহার করার কথা বলেছেন এবং সুনির্দিষ্ট বিষয়ভিত্তিক পান্ডিত্যমূলক আলোচনার উপর জোর দিয়েছেন। তিনি উল্লেখ করেছেন অতীতের এ সমস্ত আলোচনা নানা রকম দ্বন্দ্ব ও প্রতিক্রিয়ার স্মৃতিজাত এবং মিশনারী ও প্রাচ্যতত্ত্ববিদদের বিকৃতির ফলে সে সমস্ত আলোচনার ফলাফল শুভ হয়নি। তাই তিনি এমন একটি পদ্ধতির প্রস্তাব করেছেন যা প্রচলিত সংকীর্ণ ধর্মতত্ত্বকে অতিক্রম করে এক ধর্মতত্ত্বমূলক উচ্চতর ধর্মের (theology free metareligion) পাটাতনে বসে সব ধর্মের ভিতরকার বুঝাবুঝির ক্ষেত্রগুলোকে চিহ্নিত করবে। ফারুকীর এই প্রস্তাবনা এমন এক পদ্ধতির কথা বলেছে যা পারস্পরিক আলোচনার ভিতকে এগিয়ে নিতে পারে।
তার ভাষায় :
..........higher principles which are to serve as the basis for the comparison of various systems of meanings, of cultural patterns, of moralities, and of religions; the principles by reference to which the meanings of such systems and patterns may be understood, conceptualized, and systematized.

সাত
গত ২০০ বছর ধরে আধুনিকতা ও ঔপনিবেশিকতা মুসলিম সমাজকে যেভাবে ভেঙ্গেচুরে বিপর্যস্ত করে দিয়েছে তা এক কথায় নজিরবিহীন। এ সময়ের মধ্যে মুসলিম সমাজে যত দ্রুততার সাথে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক পরিবর্তনগুলো এসেছে তার তুলনাও একেবারে নেই বললে চলে। মুসলিম দুনিয়ায় জাতীয়তাবাদী আন্দোলন, জাতি রাষ্ট্রের উদ্ভব, আধুনিকায়ন ও পশ্চিমায়ন, আরব-ইসরাইল যুদ্ধ, সমাজতন্ত্রী চিন্তাভাবনার প্রসার, নানা রকমের গৃহদাহ ও আঞ্চলিক যুদ্ধ এ সময়েরই ঘটনা এবং এই সব ঘটনা যুগপৎভাবে ইসলামের যে বৈশ্বিক পরিচয় তা অনেকটা বিবর্ণ করে দিয়েছে। আশার কথা হচ্ছে ইতিহাসের এই নজিরবিহীন ধাক্কাতেও মুসলিম সমাজ বারবার ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছে বিশেষ করে তার ভিতরের শক্তিকে একত্রিত করে যাবতীয় বৈরী পরিস্থিতিকে মোকাবিলা করার চেষ্টা করেছে। সাম্প্রতিককালে মুসলিম দুনিয়ায় এমন কয়েকজন বুদ্ধিজীবীর উপস্থিতি দৃশ্যমান যারা একই সাথে ইসলামী ও পাশ্চাত্যের জ্ঞানে প্রবুদ্ধ এবং এরা আজকের যুগের সমস্যাকে সামনে রেখে ইসলামকে উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছেন। ইসমাইল ফারুকী এই ধারার উজ্জ্বলতম প্রতিনিধি যিনি শুধু আত্মিকভাবে ইসলামের ধারণা ও মূল্যবোধকে তুলে ধরেননি; নিজের কাজকর্ম, গবেষণা, শিক্ষকতা, আন্তঃধর্মীয় সংলাপ, প্রভৃতির মাধ্যমে তিনি তার যুক্তিকে উপস্থাপন করেছেন। তিনি লিখেছেন, বলেছেন এবং এমন স্পষ্টতা ও বিশ্বাসের সাথে কাজ করেছেন যা তার একমাত্র লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হয়ে ওঠে। ফারুকী মনে করতেন ইসলাম হচ্ছে বিশ্বাস ও কর্মের ধর্ম। বিশ্বাস ছাড়া যেমন কর্মের মূল্য নেই, তেমনি চর্চা ছাড়া বিশ্বাসও অকেজো হয়ে যায়। ফারুকী তার জীবনব্যাপী সাধনায় দেখিয়ে দিয়ে গেছেন একজন মুসলমানের জীবনে কিভাবে বিশ্বাস আর কর্ম জীবন্ত হয়ে উঠতে পারে। এ কালের ঝিমিয়ে পড়া মুসলমানদের জন্য এটা বড় একটা দৃষ্টান্ত বটে ।

সকল প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


মুসলিম ব্যক্তিত্ব বিভাগের সর্বাধিক পঠিত


(জন্মঃ ৮১০-মৃত্যুঃ ৮৭০ খ্রিস্টাব্দ), আরব রীতি অনুযায়ী বংশধারাসহ পুরো...

মুসলিম ব্যক্তিত্ব | 2017-12-22 11:55:49

ইসলাম আগমনের পূর্ব থেকেই ভারতের সাথে আরবদের বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিলো। বা...

মুসলিম ব্যক্তিত্ব | 2018-04-08 09:16:03

ইবনে রুশদ ছিলেন আধুনিক সার্জারির জনক। সেই সাথে ছিলেন একজন বড় মাপের আধ...

মুসলিম ব্যক্তিত্ব | 2017-12-01 00:44:18

সাহাবী  হযরত মুয়াজ ইবনে জাবাল (রা.) বলতেন- আর আমি (রাতে) ঘুমাই এবং নাম...

মুসলিম ব্যক্তিত্ব | 2020-02-06 18:38:47

ভাবুন তো... আপনার খুব কাছের কোনো বন্ধু আপনার বাসার ঠিক পাশ দিয়ে চলে গে...

মুসলিম ব্যক্তিত্ব | 2019-02-15 23:46:59

সংখ্যার জগতে ‘শূণ্য’ একটি গুরুত্বপূর্ণ চিহ্ন। গণিতের প্রাথমিক ১-৯ সংখ্...

মুসলিম ব্যক্তিত্ব | 2018-02-13 13:42:39

ইবনে সিনা (৯৮০-১০৩৭ খ্রিস্টাব্দ) যিনি কঠোর জ্ঞান সাধনা ও অধ্যবসায়ের মধ...

মুসলিম ব্যক্তিত্ব | 2017-10-28 14:09:44

অনেকদিন আগে, দামিশকের একজন পিতা তার পরিবার নিয়ে বেড়াতে যেতে বের হয়েছিল...

মুসলিম ব্যক্তিত্ব | 2018-02-01 20:15:53